অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : দুর্ঘটনা প্রতিরোধে জাতীয় মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধে বিআরটিএর প্রস্তাব অনুমোদন করেনি জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিল। ফলে মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ না করে নিয়ন্ত্রণে নীতিমালা করছে সরকার।
এছাড়া দেশের সব মহাসড়কে থ্রি-হুইলারসহ তিন চাকার যানবাহন চলাচল বন্ধে উচ্চ আদালতের আদেশ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় প্রাথমিকভাবে দেশের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি মহাসড়কে এসব যান চলাচল বন্ধে কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে এখন থেকে এই মহাসড়কগুলোতে নিষিদ্ধ যানবাহন আর চলতে দেওয়া হবে না।
মঙ্গলবার রাজধানীর বনানীতে বিআরটিএ কার্যালয়ে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের ২৯তম সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
গত ঈদুল ফিতরের সময় সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বেশি হওয়ায় গত ১৯ জুন মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধের সুপারিশ করা হয়। ওই দিন বিআরটিএর কার্যালয়ে এক কর্মশালায় বলা হয়, মোটরসাইকেল চলাচল বৃদ্ধির কারণে আগের তিনবারের তুলনায় গত ঈদুল ফিতরের সময় সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বেশি হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, মহাসড়কে মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ করার চেয়ে নিয়ন্ত্রণে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। জনবহুল বাংলাদেশে বহু বেকারের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে মোটরসাইকেল। মহাসড়কের যে পরিমাণ চাপ সে তুলনায় বিআরটিএ ও হাইওয়ে পুলিশের জনবল বাড়েনি। জনবল বাড়াতে পারলে নিয়ন্ত্রণ করতে পারব।
মন্ত্রী জানান, ঢাকা-আরিচা, ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-সিলেট এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক চলাচল বন্ধে নিবিড় নজরদারি করা হবে। হাইকোর্টের নির্দেশনা আছে মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। তাই আমরা এই পাঁচ মহাসড়ক নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করব।
সড়কের নিরাপত্তায় বিশ্বব্যাংক প্রস্তাবিত রোড সেফটি প্রোগ্রামের আওতাধীন প্রথম পর্যায়ের একটি পাইলট প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, প্রকল্পটির ডিডিপি প্রস্তুত করা হয়েছে। অনুমোদনের জন্য শিগগিরই একনেক সভায় যাবে। যার প্রাক্কালিত ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় চার হাজার ৮০ কোটি টাকা। সড়ক নিরাপত্তার প্রকল্পটি খুবই প্রয়োজনীয়।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো, সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস এবং এর কারণে সংগঠিত ক্ষতির মাত্রা কমানো। সড়ক নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত সরকারি সংস্থাগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন। প্রকল্পটিতে সওজ অধিদপ্তর, বিআরটিএ, বাংলাদেশ পুলিশ এবং স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তর স্টেক হোল্ডার হিসেবে রয়েছে। এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাল ডিসেম্বর-২০২২ থেকে নভেম্বর-২০২৭।
এখন থেকে ঘরে বসে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, বুধবার (আজ) থেকে যারা ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করবেন তারা ঘরে বসেই আবেদন করতে পারবেন। শুধুমাত্র পরীক্ষা দিতে আবেদনকারীকে বিআরটিএতে যেতে হবে।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান এমপি, পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, সড়ক পরিবহন সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম মনির হোসেন পাঠান, বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার, বিআরটিসি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম প্রমুখ।
Leave a Reply